একটা ট্রফি, কিই বা আছে এতে? দামই বা কতো, চাইলেও তো কিনে নেয়া যায়। তারপরও কেন এতো যুদ্ধ একে ঘিরে। না ততটা সহজ নয়। গুটা বিশ্বকে জোয়ারে বাসানো বিশ্বকাপ ট্রফি চাইলেই কিনতে পারবেন না আপনি।
এর সাথে জড়িয়ে বহু রূপকথার গল্প।
৩২ দলের বিশ্বযুদ্ধের আগে যার জন্য পরীক্ষায় নামে গুটা ফুটবল বিশ্ব। সেখানে কয়েক দফা পরীক্ষা দিয়ে মূল পর্বে পা রাখে ৩২ দল। ৪ বারের বিশ্বকাপ জয়ী ইতালির কথা টাই ভাবুন না একবার। চলতি বিশ্বকাপে জায়গা হয়নি তাদের। মূলপর্বে কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে কোনো একটি নির্দিষ্ট দল উঁচিয়ে ধরে বিশ্বকাপ ট্রফি। বিশ্বকে জানান দেয় ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের। কাজেই খুব সহজেই বিশ্বকাপের স্বাদ নিতে পারবেন না চাইলেই।
যে ট্রফি ঘিরে এতো লড়াই, যে ট্রফি ঘিরে এতো উন্মাদনা, সেই ট্রফি বানায় কারা? এই ট্রফিতে আছে কতোটুকু স্বর্ণ, কেমন এর বর্তমান বাজার দর? এবার সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
৫১ লেগ ও বিশ্বের নানা দেশ ঘুরে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারে পৌঁছেছে বিশ্বকাপ ট্রফি। যাতে রয়েছে ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ। উচ্চতা ৩৭ সেন্টিমিটার বা ১৪ ইঞ্চি। ওজন ছয় কেজি। এর অবয়ব বিশ্বকে হাতের মুঠোয় ধরে রাখা মানব আঙুলের মতো।
১৯৭১ সালে ট্রফিটির ডিজাইন করেন ইতালির ভাস্কর সিলভিও গাজ্জানি। সাতটি দেশের ৫৩টি ডিজাইনের মধ্যে থেকে গাজ্জানির ডিজাইনটিকেই বেছে নিয়েছিল ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। সেই সাথে ট্রফি বানানোর অধিকার পায় গাজ্জানির পরিবার। যা আগামী ২০৪২ সাল পর্যন্ত গাজ্জানির পরিবারের হাতেই থাকবে। সেই থেকে আজও সেই ডিজাইনের আদলেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বকাপ।
ওই সময় এই ট্রফি বানাতে খরচ হয়েছিল ৫০ হাজার ডলার। বর্তমান বাজার মূল্যে যার দাম ধরা হয় অনুমানিক ২০ মিলিয়ন ডলারের মতো।
তবে কঠিন প্রতিযোগির মধ্যদিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি জিতলেও সেই ট্রফি নিজেদের কাছে চিরদিন রাখতে পারে না কোনো দল। মূল ট্রফির আদলে একটি রেপ্লিকা ট্রফি দেওয়া হয় জয়ী দলকে।
তবে গাজ্জানির ডিজাইন করা এ ট্রফিটিও ফিফাকে বদলাতে হবে ২০৪২ বিশ্বকাপে। কেননা ট্রফির গায়ে বিশ্বকাপজয়ী দল ও অর্জনের সাল লিখে রাখা হয়। যেখানে লেখা সম্ভব ১৭টি জয়ীর নাম। সেই নিয়ম বহাল থাকলে জায়গা ফুরিয়ে যাওয়ায় ২০৪২ থেকে ফিফাকে ব্যবহার করতে হবে নতুন ট্রফি।